পরাধীন শৈশব
প্রায় 5 বছর ধরে আমি শিশুদের মন ও মানসিকতা নিয়ে কাজ করছি, এই দীর্ঘ সময়ে মাঝেমাঝেই আমার মন ভারাক্রান্ত হয়ে যায় এক পরাধীনতার বেদনায়। এই পরাধীনতা সরাসরি আমার নয়, আমাদের দেশের শিশুদের পরাধীনতা। যখন ওদের জায়গায় নিজেকে নিয়ে গিয়ে ভাবি তখন আমিও ওদের যন্ত্রনায় জ্বলে উঠি, লড়াইও করি ওদের মত করে।
ভাবছেন এই সমাজে শিশুরা পরাধীন, এ আবার হয় নাকি! শিশুরা তো বাবা-মায়ের কাছে থাকে। জানি আপনারা হয়তো সকলে আমার সাথে একমত হবেন না, কিন্তু একবার ভালো করে ভেবে দেখুন, নিজেকে একবার বর্তমান সময়ের শিশু মনে করে ভাবুন,
দেখবেন আপনি একেবারে ও নিরাপদ নন, স্বাধীন নন, আপনি আপনার পিতা-মাতার চাওয়া পাওয়ার, উচ্চাকাঙ্খার, স্বপ্নের দাসত্ব করছেন। পিতা মাতা তাদের চাওয়া-পাওয়া, উচ্চাকাঙক্ষা, স্বপ্ন পূরণের সফলতার জন্য আপনাকে কাজে লাগাচ্ছে। ঠিক ক্রীতদাসদের যেমন অবস্থা ছিল, তাদের চাওয়া-পাওয়া তাদের স্বপ্নের যেমন কোনো গুরুত্ব ছিল না, ঠিক তেমনি আমাদের সন্তানদের ও তাদের নিজস্ব চাওয়া-পাওয়া বা স্বপ্নের কোন গুরুত্ব নেই, সব স্বপ্ন বাবা মা ঠিক করে দেয়।
দুর্ভাগ্যের হলেও এটাই সত্য ইংরেজরা বুঝত যে, আমরা ভারতীয়দের পরাধীন করে রেখেছি। কিন্তু অনেক অভিভাবকই জানেনা এবং অনেক অভিভাবক জেনেও তা স্বীকার করতে চান না যে তারা তাদের সন্তানকে তাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা তাদের চাওয়া-পাওয়া তাদের স্বপ্ন পূরণের জন্য পরাধীন করে রেখেছে।
***
– সৌমেন মণ্ডল
This Post Has One Comment